আমাদের কিছু কিছু ক্রিকেটার নাকি মহিলা আম্পায়ারদের অধীনে খেলতে অস্বীকার করেছে। এটা কি নারী বিদ্বেষ নাকি নারী ভীতি? এখন এদের বিরুদ্ধে আইসিসি কি ছিঃ ছিঃ প্রস্তাব আনবে? সম্ভাব্য শাস্তি কী হতে পারে?
দেশে শুনলাম গরমে জনজীবন বিপর্যস্ত। গরমের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা দায়ের করার কোন সুযোগ আছে কি? আর বৃষ্টির জন্য কয়েক মাসের ফ্রি এন্ট্রি ভিসা দেবার কথা ভেবে দেখা যায়। ঋতুরাও আজকাল বাঁদরামি করছে - সময় মত আসছে না। গরমকালে শীত আর শীতকালে গরম এলে ওরা বরং জামাই আদর পেত। মার্কেটিং এর উপর ওদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক বছরের ফ্রি কোর্স চালু করা যেতে পারে।
ফেসবুকে প্রচুর ছবি দেখবেন মস্কো বা রাশিয়া বা সোভিয়েত ইউনিয়নের যেখানে সবাই বই বা কোন কিছু পড়ায় ব্যস্ত। পড়ুয়া জাতি বলে রুশদের দুর্নাম (সুনামও পড়তে পারেন ইচ্ছে হলে) আছে। আমি সাধারণত অনেক রাতে দুবনা ফিরি। এটা সাবিওলভস্কায়া রেল স্টেশন। এ চিত্র অবশ্য যেকোন স্টেশনের। এখন ছবিটা দেখে মনে হল কী যেন একটা নেই। ঠিক। বাদামের খোসা নেই, ছেঁড়া কাগজ নেই। কিচ্ছু নেই। আমাদের দেশে তো খাবার আর কাগজ দিয়ে স্টেশন, রাস্তাঘাট সব গিজগিজ করে। তাহলে খায়, পড়ে কে? এরা না আমরা?
দেশে শুনলাম প্রচন্ড গরম। গরমে সবাই অতিষ্ঠ। আচ্ছা দেশের জনগণের এক বিশাল অংশ যখন পোশাক পরিচ্ছদে, চলনে বলনে, এমনকি মনেপ্রাণে আরব হতে চায় তবে সেদেশের মরুভূমির গরমের প্রতি এত অবজ্ঞা কেন? আরব আমিরাতের পর সৌদি আরব নাকি বন্যার কবলে। তবে জানা যায়নি এর সাথে আরবদের বাংলাদেশি হবার ইচ্ছা জড়িত কিনা। ভয়ের কিছু নেই। শীত ইতিমধ্যে ভিসার জন্য আবেদন করেছে। কাগজপত্র রেডি হলেই চলে আসবে আর গরম পালাবে।
আমাদের সবচেয়ে বড় সমস্যা হল আসল সমস্যাটা আইডেন্টিফাই না করতে পারা আর করতে পারলেও সেটা সঠিক ভাবে উপস্থাপন করার ক্ষেত্রে দৈন্যতা। ফলে প্রায়ই ভাঙ্গা রেকর্ডের মত একই মিউজিক বার বার বাজিয়ে যাই। এর একটা কারণ হতে পারে আমরা এ বিষয়ে অন্যদের যুক্তি হয় শুনি না অথবা ইচ্ছা করে এড়িয়ে যাই। অথবা হাজারো সম্ভাব্য সমাধানের কোন একটাকে অন্ধভাবে একমাত্র সমাধান বলে বিশ্বাস করি। দশজনের সাথে চলতে গেলে বলার পাশাপাশি শোনার অভ্যাস গড়ে তুলতে হয়, নিজের অধিকারের পাশাপাশি অন্যের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হতে হয়।
আমরা প্রত্যেকেই নিজের সততা ও ন্যায়পরায়ণতা নিয়ে এতটাই আত্মবিশ্বাসী যে নিজের মত প্রতিষ্ঠা করতে কখন যে অসৎ ও অন্যায়ের পথ বেছে নিয়েছি সেটাই টের পাচ্ছে না। নিজের মত ও নিজের পথ নিজের জন্য কার্যকর হলেও অন্যদের কাছে যে সেটা গ্রহণযোগ্য বা ফলপ্রসূ হবে তা কিন্তু নয়। এই সহজ সত্যটি না বোঝার ফলে নতুন নতুন সমস্যার বোঝা সমষ্টির কাঁধে চেপে বসেছে। ফলে আমরা সকলের জন্য গ্রহণযোগ্য সমাধান থেকে ক্রমাগত দূরে সরে যাচ্ছি।
মানুষ বেশি বেশি উপার্জন করতে চায়, নিজেদের দাম বাড়াতে চায়। অথচ আলুটার, মূলোটার, ইলিশটার দাম বাড়লেই হিংসায় জ্বলে ওঠে। বলি তরমুজ, ইলিশ ওদের কি সাধ আহ্লাদ নেই, উৎসবে ওদের কি নামীদামী হতে ইচ্ছে করে না? ইলিশের জুতাজোড়া একটু নিজে পরুন। দেখবেন সব কেমন জলের মত পরিস্কার হয়ে গেছে।